সোমবার • ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ ইং • ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ •  ২রা জমাদিউস-সানি, ১৪৪৭ হিজরী ( ভোর ৫:৫৯ ) 

ব্রেকিং নিউজঃ
বিসিএস পরীক্ষা বন্ধ রাখতে বলল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরব্ল্যাকমেইল ও প্রতারণা করে কোটি টাকার মালিক তিনি!মওদুদ আহমদের মৃতদেহ আসবে বৃহস্পতিবারব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আর নেইরোজায় ছয় পণ্যের ঘাটতি হবে না১০ দিন আগে ট্রেনের টিকিট কেনা বন্ধ হচ্ছেফটিকছড়িতে তোতা হত্যা মামলার ৯ আসামির মৃত্যুদণ্ডইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যা, ছেলে গুলিবিদ্ধদুদকের চিঠি ইমিগ্রেশনে পৌঁছানোর ১৩ মিনিট আগেই দেশত্যাগ করেন পি কে হালদার৭ মার্চের ভাষণই স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষণা: প্রধানমন্ত্রী৩৭১ ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন ১১ এপ্রিলবাংলা ব্রাউজার ‘দুরন্ত’র যাত্রা শুরুআরও টিকা কেনা হবে, প্রধানমন্ত্রীজনগণ ভোট দেবে না জেনেই বিএনপি সরে দাঁড়িয়েছে: ওবায়দুল কাদেরচেক জাল করে ৩৬ লাখ টাকা লুটপাট!
সোমবার • ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ ইং • ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ •  ২রা জমাদিউস-সানি, ১৪৪৭ হিজরী ( ভোর ৫:৫৯ ) 

অলি-গলিতে চায়ের দোকানে চলে আড্ডা

মূল সড়ক ফাঁকা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, চিকিৎসক দল আর গণমাধ্যমের যানবাহনের বাইরে গাড়ির দেখা মেলা ভার। সড়ক প্রায় জনমানবশূন্য। তবে এর ভিন্ন দৃশ্য নজরে পড়ে শহরের অলি-গলিতে। সংক্রমণের ভয়কে ‘জয়’ করে তারা ঘুরে ফিরছেন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত, বেশ জমিয়ে দিচ্ছেন আড্ডা। তাদের এমন কর্মকাণ্ড হুমকির মুখে ফেলেছে নগরবাসীকে।

গত কয়েকদিন রাজধানীর বাসাবো, মানিকনগর, টিকাটুলি, গেন্ডারিয়া, পল্টন এলাকা ঘুরে এসব দৃশ্য নজরে এসেছে।

উত্তর বাসাবোর কালভার্ট রোডে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে দেখা গেলো বেশ ভিড়। জুমার নামাজ আদায় করতে মসজিদে ছুটে গিয়েছিলেন মুসল্লিরা। আর যাত্রাপথে প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিতেও দেখা গেছে অনেককে।

উত্তর বাসাবোর কালভার্ট রোডে কথা হয় আলী হোসেন ও ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে। তারা বললেন, সারাদিন ঘরে বসে থাকতে থাকতে ‘টায়ার্ড’।

আলী হোসেন বলেন, ভাই, কত আর ঘরে থাকা যায়? নামাজ পড়তে তাই ঘর থেকে বের হলাম। পথে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, তাই কথা বলছি।

মানিকনগর জামে মসজিদের আশপাশে ছিলো বেশ ভিড়। অনেকেই দল বেঁধে নামাজ পড়তে বের হয়েছিলেন। এ ভিড় নামাজ আদায়ের পরেও ছিলো।

শিশু আহরাবকে সঙ্গে করে নামাজ পড়তে এসেছিলেন মোহাম্মদ আলী হোসেন। তিনি বললেন, ছেলেটা গত ১৫ দিন ধরে ঘরে বন্দি। বারবার বাইরে যাওয়ার জেদ করছিলো। সেজন্য নিয়ে বেরিয়েছি।

এতটুকু কথা বলে পাশের মুদি দোকান থেকে কোমল পানীয়ের বোতল কিনে ঘরে ফেরেন তিনি। তবে দোকানের সামনেও গোটা দশেক মানুষের ভিড় ছিলো। সেখানে তিন ফুটের সামাজিক দূরত্বও মানা হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দোকানী বললেন, ভাই পাবলিকরে ম্যালা কইছি। হ্যারা কোনো কথা শুনতেই রাজি নয়।

রাজধানীর পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া হাই স্কুলের সামনের সুপারশপ ডেইলি শপিংয়ে সকাল ১১টার দিকে ছিলো বেশ ভিড়। সেখানে তিন ফুটের দূরত্বের জন্য ঘর এঁকে দেওয়া থাকলেও ভিড়ের কারণে সেটি মানাও কঠিন ছিলো।

ডেইলি শপিংয়ে কর্মরত একজন জানালেন, হাই স্কুলের সামনের সবচেয়ে বড় মুদি দোকানটি বন্ধ। সে সঙ্গে খাবারের দোকানগুলোও বন্ধ। এসব কারণে এখানে এখন ভিড় বেশি। আমরা চেষ্টা করছি। যেমন- ঢোকার সময় সাবান দিয়ে হাত ধুইয়ে দিচ্ছি। সে সঙ্গে স্যানিটাইজারও ব্যবহার করা হচ্ছে।

এদিকে, গত শুক্রবার জুমার আগে থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায়। সাধারণ সময়ের চেয়ে কম হলেও ভালোই ভিড় ছিলো সেখানে। সেখানে আগত প্রত্যেক মুসল্লিকে হাত ধুইয়ে তারপর প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া শনিবার ও রোববার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অলিগলির মোড়ে আড্ডা দিতে দেখা গেছে কিশোর-যুবকসহ নানা বয়সীদের। ভিড় ছিলো বিভিন্ন বাজার ও মুদি দোকানেও। বিভিন্ন বন্ধ দোকানের সামনে সিঁড়িতে তরুণদের মাস্ক পরেই গা গা লাগিয়ে আড্ডা দিতে 

গত কয়েকদিনই জরুরি কাজে নিয়োজিত পরিবহনের বাইরে ব্যক্তিগত স্বল্প গাড়ি রাস্তায় নামতে দেখা গেছে। রিকশা আর সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যাও কম ছিলো। তবে বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং অ্যাপ বন্ধ থাকলেও অনেক স্থানেই মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে চালকদের।

অন্যান্য দিনের মতো শনিবারও অযথা ঘর থেকে না বেরুতে, নিয়মিত হাত ধোয়াসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো।

তবে শনিবার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় বিকেল ৫টার পর বেশিরভাগ মুদি দোকান বন্ধ দেখা গেছে। তবে পুলিশ চলে যাওয়ার পর অনেকেই দোকানের ঝাঁপ অর্ধেক খুলে বেচা কেনা করেছেন। 

এর মধ্যেও আড্ডা থেকে থাকেনি। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের পরিবারের লোকজনকে বিভিন্ন স্থানে দল বেঁধে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। গলির মধ্যে ছেলেদের ক্রিকেট খেলতেও দেখা যায়।

অন্যদিকে বিভিন্ন মহল্লার কাঁচাবাজার এলাকায় রোববারও লোকজনকে এলামেলো ঘুরতে দেখা যায়। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসায় বসে থেকে তাদের আর ভালো লাগছে না। তাই একটু বাইরে ঘুরতে বেরিয়েছেন।

গেন্ডারিয়ার এক মুদি দোকানি জানান, পুলিশ এলেই লোকজন পালিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পর আবারও লোকজন রাস্তায় নেমে আসে। 

এছাড়া মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন ছাদে আড্ডা দেওয়ার পাশাপাশি ঘুড়ি ওড়াতেও দেখা গেছে। তবে রাস্তায় শিশুদের কম দেখা গেছে। 

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Pinterest
Print