

ওমর ইকবাল : পবিত্র রমজান মাসে এশার নামাজের ফরজ ও সুন্নত এর পর ও বেতের নামাজ এর আগে এই মধ্যবর্তী নামাজকে তারাবীহ বলে। আরবি ‘তারাবিহ’ শব্দটির মূল ধাতু ‘রাহাতুন’ অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। শরিয়তের পরিভাষায় মাহে রমজানে তারাবি নামাজ আদায়কালীন প্রতি দুই রাকাত অথবা চার রাকাত পরপর বিশ্রাম করার জন্য একটু বসার নামই ‘’তারাবীহ’’।
তারাবীহ নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে পুণ্য লাভের আশায় রমজানের রাতে তারাবীহ নামাজ আদায় করেন, তাঁর অতীতকৃত পাপগুলো ক্ষমা করা হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)
তারাবীহ নামাজ সম্পর্কিত অনেক প্রশ্ন করে থাকে অনেকেই , নিম্নে সেই সব প্রশ্ন ও তাঁর সঠিক উত্তর তুলে ধরা হল।
প্রশ্ন: তারাবির নামাজ কত রাকাত?
নবী করিম (সা.) বেশির ভাগ সময় রাতের শেষাংশে তারাবি আদায় করতেন এবং প্রথমাংশে বিশ্রাম নিতেন। তিনি কখনো আট রাকাত, কখনো ১৬ রাকাত, আবার কখনো ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু বিশেষ কারণবশত নিয়মিত ২০ রাকাত পড়তেন না।
কেননা, তিনি কোনো কাজ নিয়মিত করলে তা উম্মতের জন্য ওয়াজিব তথা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে যায়। এ করুণা দৃষ্টির কারণে তিনি তাঁর আমলে প্রতিনিয়ত ২০ রাকাত পূর্ণ তারাবি জামাত হতে দেননি।
২০ রাকাত তারাবি নামাজ হওয়ার সপক্ষে দলিল সহিহ হাদিসে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, ‘নবী করিম (সা.) রমজান মাসে বিনা জামাতে (একাকী) ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করতেন, অতঃপর বিতর নামাজ পড়তেন।’ (বায়হাকি)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর তারাবি নামাজ ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আর থাকেনি।
তাই তারাবির প্রতি যথাযথ গুরুত্ব হজরত ওমর (রা.)-এর আমলে কার্যকর হয়।
হজরত ওমর (রা.) মসজিদে নববিতে সাহাবিদের খণ্ড খণ্ড জামাতে ও একাকী তারাবির নামাজ পড়তে দেখে সবাই মিলে এক জামাতে তারাবি পড়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। হজরত ওমর (রা.)-এর খিলাফতকালে সাহাবিদের ইজমা দ্বারা মূলত রমজান মাসের মধ্যে ২০ রাকাত তারাবি নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করার রীতির প্রচলন হয়।
প্রশ্ন: তারাবির নামাজ কি সুন্নত না নফল?
উত্তর: তারাবির নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা জরুরি সুন্নত।
প্রশ্ন : তারাবীহ সলাতের জামাআতে নারীদের শরীক হওয়া কি জায়েয?
উত্তর : ফিতনা-ফ্যাসাদের আশঙ্কা না থাকলে মাসজিদে তারাবীহর জামায়াতে হাজির হওয়া মেয়েদের জন্য জায়েয আছে।
আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
“তোমরা আল্লাহর বান্দা নারীদেরকে মাসজিদে যেতে নিষেধ করো না।”
প্রশ্ন : তারাবীহ’ র নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে?
উত্তর : তারাবীহ’ র সঙ্গে সিয়ামের কোনো সম্পর্ক নেই। এই নামাজ সুন্নাত। আর সিয়াম একটা ফরজ এবাদত।
তবে তারাবীহ নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ এবাদত। এটি সিয়ামের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
বোখারী শরীফে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে সিয়াম পালন করল ইমানের সঙ্গে, তার পূর্বের যত গুনাহ আছে আল্লাহ তায়ালা সব মাফ করে দেবেন।’
একই হাদিসের মধ্যে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে কিয়াম করবে বা সালাতুত তারাবীহ আদায় করবে তার পূর্ববতী যত গুনাহ আছে আল্লাহ তায়ালা সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন।’
তাই রমজান মাসে সিয়ামের যত গুরুত্ব রয়েছে, ততটুকু তারাবির নামাজেরও গুরুত্ব রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জে. এম. তারেক হোসেন। বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগঃ সিটিজি ডেইলি নিউজ, ই-মেইলঃ admin@ctgdailynews.com বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগঃ contact@ctgdailynews.com, ctgdailynewsbd@gmail.com
all rights reserved by সিটিজি ডেইলি নিউজ © 2020 Developed by Shahe Arman
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জে. এম. তারেক হোসেন। বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগঃ সিটিজি ডেইলি নিউজ, ই-মেইলঃ admin@ctgdailynews.com বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগঃ contact@ctgdailynews.com, ctgdailynewsbd@gmail.com
all rights reserved by সিটিজি ডেইলি নিউজ © 2020 Developed by Shahe Arman