
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি, অনিয়ম আর চেক জালিয়াতি করে ১০৬টি চেকের মাধ্যমে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেছেন তিনি।
সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে মহাপরিচালক বরাবর ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উত্থাপিত হয়। পরে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
শুধু তাই নয়, চেক জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের এমন ঘটনায় ওই তিন বছর কটিয়াদি উপজেলায় পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা আরও চারজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি অফিস আদেশের মাধ্যমে বোর্ডের একজন যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে আদায়কৃত ঋণের টাকা কটিয়াদী উপজেলার অগ্রণী, কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে জমা রাখা হতো। আর হিসাবরক্ষক ফেরদৌস দীর্ঘদিন ধরে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে সেই টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। পরে জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসলে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া চেক বই বাতিলের জন্য কটিয়াদি মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরিও করা হয়।
এ ব্যাাপারে চেক জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাতের প্রধান অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিভিন্ন সময় খরচ দেখিয়ে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তারা চেকে আমার সই নিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন। অফিসের প্রধান কর্মকর্তা ও আমার যৌথ স্বাক্ষরেই টাকা উঠানো হয়। তবে উনারা কিভাবে সেই টাকা খরচ করেছেন সে হিসাবও আমি জানি না।
তার দাবি,ব্যাংকের চেক ও সকল কাগজপত্র সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই হলে তিনি নিরপরাধ প্রমাণিত হবেন।
বিআরডিবি ঢাকার যুগ্ম পরিচালক এবং তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, যেহেতু অভিযোগের সঙ্গে যাবতীয় বিল ভাউচার, ব্যাংকের স্টেটমেন্ট ও চেকের বিভিন্ন বিষয় জড়িত সেগুলো আমরা যাচাই বাছাই করছি। আপাতত অভিযুক্তকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। যাবতীয় তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।
কিশোরগঞ্জ বিআরডিবি’র উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, প্রথমে এক লাখ ২০ হাজার টাকার চেক জালিয়াতির অভিযোগ পাই। পরে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আরও দুর্নীতি বা অনিয়ম যাচাই করতে মহাপরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠাই। এরপর সেখান থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি পাঠিয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মামলাসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় কটিয়াদি উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র দাস বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, অভিযোগটি মহাপরিচালক বরাবর যাওয়ার পর আমাকেও শো-কজ করা হয়েছে। তবে আমিও এমন ঘটনার প্রকৃত জবাব কর্তৃপক্ষকে দিয়েছি। আমিসহ আরও চার জন কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করেছে হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌস আজিজ। এমনকি তিনি ইউএনও’র স্বাক্ষরও জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন। এর সম্পূর্ণ দায়ভার হিসাবরক্ষকের।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জে. এম. তারেক হোসেন। বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগঃ সিটিজি ডেইলি নিউজ, ই-মেইলঃ admin@ctgdailynews.com বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগঃ contact@ctgdailynews.com, ctgdailynewsbd@gmail.com
all rights reserved by সিটিজি ডেইলি নিউজ © 2020 Developed by Shahe Arman
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জে. এম. তারেক হোসেন। বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগঃ সিটিজি ডেইলি নিউজ, ই-মেইলঃ admin@ctgdailynews.com বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগঃ contact@ctgdailynews.com, ctgdailynewsbd@gmail.com
all rights reserved by সিটিজি ডেইলি নিউজ © 2020 Developed by Shahe Arman