

মেহরাব: এক মাসের বেশি সময় ধরে করোনার কারণে স্থবির জনজীবন। কার্যত বন্ধ রয়েছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। কর্মহীন এ সময়ে ব্যাংক ও ঘরে থাকা সঞ্চয়ের অর্থ ফুরিয়ে গেছে অনেকের। এখন টান পড়তে শুরু করেছে ব্যাংকে থাকা মেয়াদি আমানত (ফিক্সড ডিপোজিট বা এফডি) ও সঞ্চয়ী আমানত প্রকল্পের (ডিপিএস) মতো সঞ্চয়ে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই সঞ্চয়ের অর্থ তুলে নিচ্ছেন অনেক গ্রাহক।
প্রতিদিনই অনেক গ্রাহক এফডি, ডিপিএস সঞ্চয় নগদায়ন করতে ব্যাংকের শাখায় হাজির হচ্ছেন। দিন দিন এ ধরনের গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কিছু গ্রাহক এফডি বা ডিপিএস মেয়াদ পূর্তির আগেই ভাঙাতে পারলেও অনেককেই ফেরত পাঠাচ্ছেন ব্যাংকাররা।
আবার অনেক ব্যাংকারই গ্রাহকের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় এফডি নগদায়ন করে দিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এফডি নগদায়ন না করে গ্রাহকদের প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। অন্তত এক ডজন ব্যাংকের ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শাখায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যাংকারদের অসহযোগিতার কথাও জানিয়েছেন অনেক গ্রাহক। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রয়োজনের মুহূর্তে তারা এফডি, ডিপিএস নগদায়ন করতে পারছেন না। সাধারণ ছুটির এই সময়ে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। এ অবস্থায় মেয়াদ শেষ হয়নি এমন এফডি, ডিপিএস নগদায়নের সুযোগ নেই বলে যুক্তি দিচ্ছেন ব্যাংকাররা।
ব্যাংককাররা জানান, মানুষের আয়ের কোনো পথ নেই। অনেক বড় ব্যবসায়ীও মেয়াদি আমানত ভাঙাতে আসছেন তবে এ ধরনের গ্রাহকের সংখ্যা এখনো খুব বেশি না। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোয় ভালো কিছু দেখা যাচ্ছে না।
মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে এফডি বা ডিপিএস নগদায়ন করে দিলে ব্যাংকেরই লাভ। এক্ষেত্রে গ্রাহক অনেক কম মুনাফা পান। এজন্য মানবিক দিক বিবেচনা করে গ্রাহকদের প্রয়োজনের কথা শুনছে ব্যাংকগুলো।
এ মুহূর্তে গ্রাহকের প্রয়োজন এমন অর্থ এফডি বা ডিপিএসের চেয়ে কম হলে গ্রাহককে ছোট অংকের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। গ্রাহক একেবারেই অপারগ হলে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এফডি নগদায়ন করে দেয়া হচ্ছে।
২০১৯ সালের বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে কাগজে-কলমে ব্যাংক হিসাব আছে ১০ কোটি ২৮ লাখ ৮১ হাজার ৯৬৩টি। এসব ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ১১ লাখ ৫৯ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।
এর মধ্যে বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব সংখ্যা ১০ কোটি ২৪ লাখ ৮৭ হাজার ৬১২টি। বেসরকারি খাতের আমানতের পরিমাণ ৯ লাখ ৪৩ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা।
দেশের ব্যাংকগুলোতে থাকা আমানতের ৪৮ দশমিক ১৫ শতাংশ অর্থ মেয়াদি আমানত। বিভিন্ন নামে ফিক্সড ডিপোজিট ও ডিপিএস হিসাবে এ অর্থ ব্যাংকগুলোতে জমা রেখেছেন ৪০ লাখ ৩৬ হাজার গ্রাহক।
সাধারণত মেয়াদি আমানতের সর্বনিম্ন মেয়াদ ৩ মাস। সর্বোচ্চ মেয়াদ সুনির্দিষ্ট না থাকলেও সাধারণত বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের নামে ব্যাংকগুলো ১২ বছর পর্যন্ত ডিপিএস খুলছে।
চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া জনগোষ্ঠীর একটি অংশও ব্যাংকে মেয়াদি আমানত রেখে মুনাফার প্রত্যাশায় থাকেন। করোনাভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট অচলাবস্থায় এ শ্রেণীর মানুষের অর্থের টান পড়েছে। এ কারণে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই এফডি বা ডিপিএস ভাঙাতে ব্যাংকগুলোতে ভিড় করছেন গ্রাহকরা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জে. এম. তারেক হোসেন। বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগঃ সিটিজি ডেইলি নিউজ, ই-মেইলঃ admin@ctgdailynews.com বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগঃ contact@ctgdailynews.com, ctgdailynewsbd@gmail.com
all rights reserved by সিটিজি ডেইলি নিউজ © 2020 Developed by Shahe Arman
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জে. এম. তারেক হোসেন। বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগঃ সিটিজি ডেইলি নিউজ, ই-মেইলঃ admin@ctgdailynews.com বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগঃ contact@ctgdailynews.com, ctgdailynewsbd@gmail.com
all rights reserved by সিটিজি ডেইলি নিউজ © 2020 Developed by Shahe Arman