
করোনা উপসর্গ নিয়ে প্রতিনিয়ত চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন প্রান্তে কেউ না কেউ মারা যাচ্ছে। তাদের কেউবা করোনা পজিটিভ হয়ে, আর কেউ বা করোনার পজিটিভ-নেগেটিভ কোন টেস্ট করারই সুযোগ পাননি। তবে সম্প্রতি এক কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু পুরো চট্টগ্রামবাসীকে একটু নাড়িয়ে তুলেছে।
১২ জুন শুক্রবার দিবাগত রাতে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে এক কলেজ শিক্ষকের মৃত্যুর পর রাউজান উপজেলায় তার নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হলে করোনায় মারা গেছে সন্দেহে সেখানকার গ্রামবাসী তার লাশ দাফন করতে দেয়নি। এমনকি তার স্বজনেরাও লাশ গ্রহণ করেনি। পরে ওই শিক্ষকের লাশ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কর্মস্থল রাঙ্গুনিয়ায়। কিন্তু বিধিবাম। সেখানেও লাশ দাফনের কোনো উপায় না দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অসহায় পরিবারটির সদস্যরা। পরবর্তীতে খবর পেয়ে গভীর রাতে পুলিশ ও গাউছিয়া কমিটির বাংলাদেশ রাঙ্গুনিয়া শাখার উদ্যোগে ওই শিক্ষকের লাশ দাফন করা হল।
প্রয়াত আনোয়ারুল ইসলাম (৫৯) রাঙ্গুনিয়াস্থ সৈয়দা সেলিমা কাদের চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ১১ জুন সন্ধ্যায় হঠাৎ তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তার নিজ বাড়ি রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় হলেও, কর্মসূত্রে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৯ জুন তার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হয়েছিল। তবে, মৃত্যুর একদিন পর প্রাপ্ত নমুনা প্রতিবেদন অনুযায়ী তার করোনা নেগেটিভ আসে।
এই শিক্ষকের মৃত্যুর খবরে তার ছাত্র-ছাত্রী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
রাউজান থেকে লাশ ফেরত নিয়ে রাঙ্গুনিয়ায় তার ভাড়া বাসায় আসলে সেখানেও প্রথমে লাশ দাফনে বাধাপ্রাপ্ত হন। পরে খবর পেয়ে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ ও গাউছিয়া কমিটির সদস্যরা এগিয়ে আসে। এলাকার উদ্যমী তরুণদের সঙ্গে নিয়েই খোঁড়া হল কবর। সব রীতি মেনেই তাকে দাফন করা হয়।
ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী লাশের গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফনের যাবতীয় কাজ পরিচালনা করেন রাঙ্গুনিয়া গাউসিয়া কমিটির নিবেদিত সদস্যরা। সকল কাজ সম্পন্ন করে রাত প্রায় ৩.৩০ মিনিটের দিকে মরিয়ম নগর পাগলা মামার মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে ওই শিক্ষকের লাশ দাফন করা হয়।


প্রয়াত শিক্ষকের জানাযা নামাযের ইমামতি করেন গাউসিয়া কমিটি চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক আশরাফ উদ্দীন। করোনাকালে লাশ দাফন সম্পর্কে তাঁর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, “মহামারিতে মারা গেলেও ইসলামি রীতি অনুযায়ী লাশ দাফন করার নিয়ম রয়েছে। তাই বাংলাদেশে মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে গাউসিয়া কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন টিম গঠন করে যথাযথ সম্মানের সাথে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাশ দাফনের কাজ করে যাচ্ছে। এই শিক্ষকের লাশ কোথাও দাফন করাতে পারছে না শুনে গভীর রাতে আমরা কয়েকজন সদস্য এগিয়ে আসি এবং এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে যথাযথভাবে দাফন করি।”
রাঙ্গুনিয়া থানার এসআই ইসমাঈল হোসেন জুয়েল জানান, ‘রাউজানে তার নিজ গ্রাম থেকে এই শিক্ষকের লাশ ফেরত পাঠানো হয়েছে খবর পাওয়ার পর রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ দাফনের দায়িত্ব নেয়। এলাকার তরুণ ও গাউসিয়া কমিটিকে সাথে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।’
প্রতিনিধি, সিটিজি ডেইলি নিউজ, রাঙ্গুনিয়া থানা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জে. এম. তারেক হোসেন। বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগঃ সিটিজি ডেইলি নিউজ, ই-মেইলঃ admin@ctgdailynews.com বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগঃ contact@ctgdailynews.com, ctgdailynewsbd@gmail.com
all rights reserved by সিটিজি ডেইলি নিউজ © 2020 Developed by Shahe Arman
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জে. এম. তারেক হোসেন। বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগঃ সিটিজি ডেইলি নিউজ, ই-মেইলঃ admin@ctgdailynews.com বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগঃ contact@ctgdailynews.com, ctgdailynewsbd@gmail.com
all rights reserved by সিটিজি ডেইলি নিউজ © 2020 Developed by Shahe Arman